যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ির সন্ধান : বাংলাদেশে এস কে সিনহা ও ভাইয়ের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

Published On Mar 31, 2022

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তিন তলা বাড়ির সন্ধান পাওয়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (এস কে সিনহা) ও ছোট ভাই অনন্ত কুমার সিনহার বিরুদ্ধে ঢাকায় মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ ৩১ মার্চ (বৃহস্পতিবার) সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান মামলাটি দায়ের করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, এস কে সিনহা প্রধান বিচারপতি থাকাকালে বিভিন্নভাবে অর্জিত অর্থ হুন্ডিসহ বিভিন্ন অবৈধ পন্থায় আমেরিকায় পাচার করে তার ছোট ভাই নরেন্দ্র কুমার সিনহার হিসাবে ট্রান্সফার করেন। তা দিয়ে আমেরিকার নিউজার্সি এলাকায় ২ লাখ ৮০ হাজার ডলার নগদ প্রদান করে বাড়ি ক্রয় করেন। যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় এবং ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অপরাধ হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়।

দুদকের মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২ লাখ ৮০ হাজার ডলার অর্থাৎ প্রায় আড়াই কোটি টাকা দিয়ে সিনহা তার ভাইয়ের নামে বাড়িটি কেনেন। ২০১৮ সালের ১২ জুন এ বাড়িটি কেনা হয়। যার ঠিকানা ১৭৯, জ্যাপার স্ট্রিট, প্যাটারসন নিউ জার্সি ০৭৫২২। এস কে সিনহা প্রধান বিচারপতি থাকার সময় অপরাধলব্ধ অর্থ হুন্ডিসহ বিভিন্ন কায়দায় আমেরিকায় পাচার করেন। পরে তার ছোট ভাই অনন্তর অ্যাকাউন্টে এসব অর্থ ট্রান্সফার করা হয়।

এজাহারে আরও বলা হয়, এস কে সিনহার ছোট ভাই অনন্ত কুমার সিনহা আমেরিকায় ডেন্টিস্ট হিসেবে কর্মরত। আমেরিকার একটি ব্যাংক থেকে ৩০ বছরের জন্য ১ লাখ ৮ হাজার ৭৫০ ডলার ঋণ নিয়ে ১ লাখ ৪৫ হাজার ডলার দিয়ে একটি বাড়ি কেনেন তিনি। ২০১৮ সালের ১২ জুন ২ লাখ ৮০ হাজার ডলার নগদ অর্থ দিয়ে আরেকটি বাড়ি কেনেন তিনি। ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল থেকে ২০ জুন পর্যন্ত নিউজার্সির প্যাটারসনে অবস্থিত ভ্যালি ন্যাশনাল ব্যাংকে অনন্ত কুমার সিনহার অ্যাকাউন্টে ১ লাখ ৯৬ হাজার ৪৫৮ ডলার জমা হয়। এছাড়া একই অ্যাকাউন্টে পৃথক উৎস থেকে ওই বছরের ৫ মার্চ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত ৬০ হাজার ১০ ডলার জমা হয়।

অনন্ত কুমার সিনহা তার বড় ভাই সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে নিয়ে ওই সময় ভ্যালি ন্যাশনাল ব্যাংকে যান। তখন এসকে সিনহা ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে জানান, আমেরিকার প্যাটারসন এলাকায় বাড়ি কেনার জন্য বন্ধুর কাছ থেকে তিনি ফান্ড পেয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে সুরেন্দ্র কুমার সিনহা প্রধান বিচারপতি থাকাকালে বিভিন্নভাবে অবৈধ অর্থ অর্জন করে তা হুন্ডিসহ বিভিন্ন কায়দায় যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেন এবং তার ছোট ভাইয়ের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করেন।

সচেতন মহলে প্রশ্ন উঠছে, ডেন্টিস্ট ভাইয়ের আকাউন্টে জমা হওয়া ডলারের জন্য বড় ভাইকে কেন ব্যাঙ্কে জেতে হবে?  যার নামে আকাউন্ট তিনি ছাড়া ভিন্ন কেহ ব্যাঙ্কে গিয়ে কোন আকাউন্ট নিয়ে কথাই বলতে পারবেন না। তাহলে?  আকাউন্ট অনন্ত কুমার সিনহার, বাড়ি কেনা হয়েছে অনন্তের নামে, এখানে সুরেন্দ্র ঢুকছেন কিভাবে? আমেরিকায় কোন ব্যাঙ্কই বেআইনি পন্থায় কোন ডলার জমা নেয় না এবং বেআইনি ডলারের বিপরীতে কোন লোণও দেয় না। তাছাড়া এস কে সিনহা কি আমেরিকান বৈধ অভিবাসী? দুদক ঢাকায় মামলা করে কি করবে? টাকা পাচারের প্রমাণ পেলে ঢাকাতে মানিলন্ডারিং মামলা হতে পারে। দুদকের হাতে কি সেই প্রমাণ আছে? অভিবাসী মাত্রই জানেন, যে কোন রিয়েল এস্টেট এজেন্ট কিংবা উকিল অল্প খরচে কারো নামে কোন বাড়িঘর আছে কি না কিংবা তাতে কত ডলার লোণ আছে কিংবা কত ডলারে কেনা হয়েছে, তা বেড় করতে পারে। দুদক তা- ই করে থাকলে হাসির খোরাক হবে যাহা কোনভাবেই কাম্য নয়।