রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতাকে ‘গণহত্যা’ স্বীকৃতি যুক্তরাষ্ট্রের। র‍্যাবের নিষেধাজ্ঞা বহাল।

Published On Mar 31, 2022

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর চালানো সহিংসতাকে "গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ"  বলে স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ২১ মার্চ এ ঘোষণা দেন। ওয়াশিংটন ডিসিতে হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ ঘোষণা দেন। অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, হলোকাস্ট (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইহুদিদের ওপর গণহত্যা) ছাড়াও বিশ্বে সাতটি গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার অষ্টম গণহত্যার স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে। কারণ সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সদস্যরা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছেন বলে আমরা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি। খবর আল জাজিরার। 

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সহিংসতাকে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। সোমবার ওই সিদ্ধান্তেরই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন ব্লিঙ্কেন। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এই প্রথম রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সহিংসতাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দিল। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন গত বছরের ডিসেম্বরে মালয়েশিয়া সফরের সময় বলেছিলেন, রোহিঙ্গাদের প্রতি মিয়ানমারের আচরণ গণহত্যা কি-না, তা খুবই সক্রিয়ভাবে খতিয়ে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর নৃশংস দমন-পীড়ন, জ্বালাও-পোড়াওয়ের মুখে লাখো রোহিঙ্গা মুসলিম প্রাণ বাঁচাতে সেই দেশ থেকে পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।

Emblem of Rapid Action Battalion

এদিকে র‍্যাবের বিরুদ্ধে আমেরিকান অবস্থান পরিবর্তনের কোন খবর পাওয়া যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির চেয়ার কংগ্রেসম্যান গ্রেগরি মিক্সের কাছে র‍্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং র‍্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাতজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে র‍্যাবের নানা কার্যক্রম নিয়ে ১৭ পৃষ্ঠার ডকুমেন্ট হস্তান্তর করেছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ। একইসাথে তারা রাজনৈতিক আশ্রয় বাতিল করে বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরী ও বুদ্ধিজীবী হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত আশরুজ্জামানকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর গণস্বাক্ষরিত দাবিনামাও প্রদান করেন।
গত ২৩ মার্চ সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে কংগ্রেসম্যান গ্রেগরি মিক্সের ফান্ডরেইজিং অনুষ্ঠানে এসব ডকুমেন্ট হস্তান্তর করা হয় বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নেতা প্রকৌশলী মোহাম্মাদ আলী সিদ্দিকী। ‘মার্চ টু ভিক্টোরি! ম্যানহাটান রিসিপশান টু বেনিফিট কংগ্রেসম্যান গ্রেগরি মিক্স উইথ স্পেশাল গেস্ট ডেমোক্রেটিক ককাস চেয়ার হাকিম জেফ্রিজ’ শিরোনামে এ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরো ছিলেন কংগ্রেসওম্যান ক্যারোলিন ম্যালোনি, নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমস, ম্যানহাটান বরো প্রেসিডেন্ট, কাউন্সিলম্যান, অ্যাসেম্বলিম্যানসহ অন্যরা।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. প্রদীপ রঞ্জন কর, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার ফরাসত আলী, প্রকৌ. মোহাম্মাদ আলী সিদ্দিকী, এ্যাড. শাহ মো. বখতিয়ার আলী, রুমানা আখতার, জালাল উদ্দিন জলিল, মনজুর চৌধুরী, খন্দকার জাহিদুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, সাকি কর প্রমুখ। উল্লেখ্য, গত ১০ ডিসেম্বর গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‍্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাতজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।