পূর্বপরিচিতরা খুন করেন সুবলকে
Published On Jul 13, 2021
উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ১০ নম্বর সড়কের বাসায় সুবল চন্দ পালের (৪৪) লাশটি ছিল শোয়ানো। তাঁর গলার ডান দিকে ছুরির আঘাত, হাত–পা নাইলনের রশি দিয়ে বাঁধা। খবর পেয়ে গত রোববার সকালে পুলিশ সুবলের মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরে তদন্তে জানা যায়, সুবলকে যিনি খুন করেছেন, তিনি তাঁর পূর্বপরিচিত। উত্তরা পশ্চিম থানা–পুলিশের পাশাপাশি পুলিশের অন্যান্য তদন্তকারী সংস্থাগুলোও মাঠে নামে।
দুদিন পর আজ মঙ্গলবার উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, এ ঘটনায় সিরাজগঞ্জের বেলকুচি থেকেই সন্দেহভাজন দুই হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন মো. মাসুদ রানা ও মো. মিজানুর রহমান। সুবল যে বাসায় দারোয়ানের কাজ করতেন, ওই বাসাতেই গাড়িচালক ছিলেন মাসুদ। তখন তিনি প্রায়ই সুবলের ঘরে বসে ইয়াবা সেবন করতেন। মাঝে মাঝে নারীদেরও নিয়ে আসতেন। মাস দেড়েক আগে মাসুদ চাকরি ছেড়ে সিরাজগঞ্জে চলে যান। সেখানে একটি লুঙ্গি কারখানায় তিনি মাইক্রোবাসচালকের কাজ নিয়েছিলেন।
কেন খুন হলেন সুবল? এ সম্পর্কে উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার বলেন, প্রথমে তাঁদের পরিকল্পনা ছিল, দারোয়ানের হাত-পা বেঁধে জিম্মি করে রাখবেন। বাড়ির মালিক ফজরের নামাজ পড়তে মসজিদে গেলে ওই সময় তাঁরা বাসায় ঢুকে ডাকাতি করবেন। এখানে আসার আগে মাসুদ সুবলকে ফোন দিয়ে বলেছিলেন, এক চাচাতো ভাইকে নিয়ে তিনি একটা রাত থাকতে চান ওখানে। সে অনুযায়ী, ১০ জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে মাসদু ও মিজানুর সুবলের কক্ষে এসে ওঠেন। সেখানে ইয়াবাও সেবন করেন। পরিকল্পনামতো রাত আনুমানিক সাড়ে তিনটার দিকে ঘুমন্ত সুবলের হাত-পা বাঁধার চেষ্টা করলে সুবল জেগে ওঠেন। তখন রুমে থাকা একটি ধারালো কাঁচি সুবলের গলায় ধরে তাঁরা তাঁকে চুপ করে থাকতে বলেন। মিজান একপর্যায়ে সুবলের গলা নাইলনের রশি দিয়ে পেঁচানোর চেষ্টা করেন। ধস্তাধস্তি শুরু হলে মাসুদ সুবলের গলায় ধারালো কাঁচি দিয়ে আঘাত করেন। এতে রক্তক্ষরণ শুরু হলে তাঁরা সুবলের গলা চেপে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। সুবলের মৃত্যুর পর তাঁরা শক্ত করে তাঁর হাত পা বাঁধেন। পরে পানি দিয়ে নিজেদের শরীরে ও জামাকাপড়ে থাকা রক্তের দাগ ধুয়ে মুছে ফেলার চেষ্টা করেন। খুনের পর তাঁরা ডাকাতির পরিকল্পনা বাদ দিয়ে আবারও সিরাজগঞ্জে চলে যান।