‘পোশাকই লাইসেন্স, বন্দুকই লাইসেন্স’

Published On Nov 25, 2021

রাজধানীর ফার্মগেটে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি গাড়ি আটকে চালকের লাইসেন্স দেখতে চাইলে পুলিশ সদস্য বলেন, পোশাকই লাইসেন্স, বন্দুকই লাইসেন্স। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে এক পুলিশ সদস্য শিক্ষার্থীদের কটূক্তি করেন। পরে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ক্ষমা চাইতে হয় তাঁকে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। গাড়িচাপায় নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসানের মৃত্যুর ঘটনার বিচার, বাসভাড়ায় হাফ পাস ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে  আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফার্মগেটে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা বাসসহ কোনো গণপরিবহন চলাচল করতে দিচ্ছিলেন না। ব্যক্তিগত গাড়ির চালকের লাইসেন্সসহ কাগজপত্র যাচাই করে দেখেন তাঁরা। কোনো অসংগতি পেলে গাড়ি আটকে রাখা হয়। তবে অ্যাম্বুলেন্স চলাচলে কোনো বাধা দেননি শিক্ষার্থীরা।
দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি গাড়ি ফার্মগেট মোড়ে এলে শিক্ষার্থীরা গাড়ির চালকের লাইসেন্স দেখতে চান। গাড়ির চালক তা দেখাতে পারেননি।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এ সময় তিনি পুলিশের পোশাকই লাইসেন্স বলে দাবি করেন। পুলিশের আরেক সদস্য বলেন, বন্দুকই লাইসেন্স। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে পুলিশের ইমরান নামের এক সদস্য শিক্ষার্থীদের কটূক্তি করেন। এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।

এরপর শিক্ষার্থীরা ওই পুলিশ কর্মকর্তার ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়ে আন্দোলন করতে থাকেন। তাঁরা স্লোগান দিয়ে বলেন, ‘পুলিশের লাইসেন্স নাই, বাংলাদেশ পুলিশ হায় হায়।’

এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা যখন পুলিশের গাড়িচালকের কাছে লাইসেন্স চাই, উনি বলেছেন, আমার কাছে লাইসেন্স নাই। আমরা যখন একজন পুলিশ অফিসার এনে তাঁর কাছে জবাবদিহি চাই। তখন চালক বলছেন, আমার পোশাকই আমার লাইসেন্স। দ্বিতীয়ত, তিনি আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন।’ আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘একজন পুলিশ বলে, বন্দুকই তার লাইসেন্স।’ আরেক শিক্ষার্থী বলেন, দায়িত্বরত পুলিশ এসে বলেন, গাড়িতে গালি দেওয়া পুলিশ নাই। এর কিছুক্ষণ পরে শিক্ষার্থীরা গিয়ে দেখেন তিনি গাড়িতে আছেন।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের একপর্যায়ে তেজগাঁও জোনের পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) রুবাইয়াত জামান ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি সব ঘটনা শোনেন। তাঁর মধ্যস্থতায় একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সামনে এসে কটূক্তিকারী ওই পুলিশ কর্মকর্তা দুঃখ প্রকাশ করেন। ইমরান নামের ওই পুলিশ কর্মকর্তা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে বাজে ব্যবহার করছি, তার জন্য আমি দুঃখিত।’ তারপর পুলিশের গাড়ি যেতে দেন শিক্ষার্থীরা।